বাংলাদেশে ‘র’ একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ। এ গ্রন্থে ইসকন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। গ্রন্থের এক জায়গায় লেখা আছে-
‘ইসকন নামে একটি সংগঠন বাংলাদেশে কাজ করছে। এর সদর দফতর নদীয়া জেলার পাশে মায়াপুরে। মূলতঃ এটা ইহুদীদের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। এই সংগঠনের প্রধান কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে উস্কানিমূলক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি।’
[বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধানদের কথা, বাংলাদেশে ‘র’ পৃষ্ঠা: ১৭১]
ঐ বইয়ে আরো লেখা আছে, ইসকনের সৃষ্টি ভারতে নয়, আমেরিকার নিউইয়র্কে। ১৯৬৬ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠাতার নাম ‘অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ’।
সে ভারতে কোনো হিন্দু শিক্ষালয়ে লেখাপড়া করে নি, লেখাপড়া করেছে খ্রিস্টানদের চার্চে। পেশায় তিনি ছিলেন ফার্মাসিউটিকাল ব্যবসায়ী। কিন্তু হঠাৎ করেই তার মাথায় নতুন এক চিন্তার আবির্ভাব ঘটে। হিন্দু ধর্মের নতুন সংস্কার করতে তিনি উদ্যোগী হন। স্বামী প্রভুপাদ নতুন ধরনের হিন্দু সংগঠন চালু করেন। কিন্তু মূল ধারার সনাতনী হিন্দুরা এর বিরোধিতা শুরু করে।
অধিকাংশ হিন্দুই তার বিরুদ্ধচারণ শুরু করে। কিন্তু সেই সময় স্বামী প্রভুপাদের পাশে এসে দাঁড়ায় ইহুদি এজেন্টরা। জে. স্টিলসন জুডা, হারভে কক্স, ল্যারি শিন ও টমাস হপকিন্স-এর মতো চিহ্নিত ও বিখ্যাত ইহুদী এজেন্টরা স্বামী প্রভুপাদের পাশে এসে দাঁড়ায়।
এ সংগঠনটির মৌলিক বিশ্বাস মধ্যযুগের চৈতন্য থেকে উদ্গত। চৈতন্য’র অনতম থিউরী হচ্ছে, ‘নির্যবন করো আজি সকল ভুবন’, যার অর্থ হলো সারা পৃথিবীকে মুসলমান মুক্ত করো।
এ সংগঠনটি হিন্দুদের অধিকাংশ মৌলিক বিশ্বাসকে অস্বীকার করে। হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাস এখানে উপেক্ষিত। এ সংগঠন নিজেদের সৃষ্ট মতাদর্শ হিন্দুদের উপর চাপিয়ে দেয়।
সংগঠনটি মূলত এনজিও টাইপের। এরা নিন্মবর্ণের হিন্দুদের দলে ভিড়িয়ে দল ভারি করে। এ কারণে তাদের আস্তানাগুলো সাধারণত নিন্মবর্ণের হিন্দুদের আস্তানার পাশে গড়ে উঠেছে।
যেমন ঢাকা শহরে স্বামীবাগ মন্দিরের পাশেই তৈরি করা হয়েছে ইসকন মন্দির। কারণ, স্বামীবাগে রয়েছে বিশাল মেথর পট্টি। এই মেথর পট্টির নিচুবর্ণের হিন্দুদের নিয়ে তারা দল ভারি করেছে। সিলেটেও ইসকনদের প্রভাব বেশি। কারণ, চা শ্রমিকদের একটি বিরাট অংশ নিচু বর্ণের হিন্দু। এদেরকে দলে নিয়ে দল ভারি করে অতি সহজে কাজ করে চলেছে ইসকন।
তাদের মূল কাজ হলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করা। এ লক্ষ্যে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সনাতনী মন্দির দখলের পরিকল্পনা করেছে। ইতোমধ্যে তারা দেশের অনেক মন্দির দখল করে নিয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ ঢাকার স্বামীবাগের মন্দিরটির কথা উল্লেখ করা যায়। এ মন্দিরটি আগে সনাতনদের ছিলো। বর্তমানে সেটি ইসকন দখল করে নিয়েছে। সনাতনীরা এর প্রতিবাদ করলে ইসকন তাদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। শুধু ঢাকা নয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ধরনের দখলদারিত্ব কায়েম করেছে ইসকন। পঞ্চগড়ে ইসকনের লোকজন সনাতনদের পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে সনাতন হিন্দুকে হত্যা করে মন্দির দখল করে নিয়েছে ইসকন। এছাড়া সিলেটের জগন্নাথপুরেও সনাতনদের রথযাত্রায় হামলা চালিয়েছে ইসকন নেতা মিন্টু ধর।
শুধু মন্দির দখলেই সীমাবদ্ধ নেই ইসকন। বাংলাদেশের বড় বড় মসজিদগুলোও ইসকনের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। মসজিদগুলোতে তারা সাম্প্রদায়িক হামলা করেছে। ঢাকাস্থ স্বামীবাগে মসজিদের তারাবির নামাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো ইসকন। নামজের সময় ইসকনের গান-বাজনা বন্ধ রাখতে বলায় তারা পুলিশ ডেকে এনে তারাবির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল! পরে বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ হয়।
No comments:
Post a Comment